May 21, 2024, 10:00 pm

রাফাহ শহরে ইসরায়েলি সেনা অভিযান ‘হাজার হাজার’ লোকের হতাহতের কারণ হতে পারে: হামাস

গাজার হামাস শাসকরা শনিবার সতর্ক করেছে, বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের শেষ আশ্রয়স্থল জনাকীর্ণ রাফাহতে ইসরায়েলের পরিকল্পিত সেনা অভিযানের কারণে শহরটিতে ‘হাজার হাজার’ হতাহতের ঘটনা ঘটতে পারে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সেনাবাহিনীকে রাফায় অভিযানের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি শুক্রবার গভীর রাতে সামরিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরের ‘জনসংখ্যা সরিয়ে নেওয়া এবং হামাসের ব্যাটালিয়ন ধ্বংস করার জন্য একটি সম্মিলিত পরিকল্পনা’ মন্ত্রিসভায় জমা দিতে বলেন।
হামাস এক বিবৃতিতে বলেছে, যেকোন সামরিক পদক্ষেপের বিপর্যযয়মূলক প্রতিক্রিয়া হবে যা ‘রাফাহ আক্রমণ করলে হাজার হাজার শহীদ এবং আহত হতে পারে’।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার জবাবে ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কঠোর সমালোচনা করার পর নেতানিয়াহুর এই ঘোষণা বিশ্ব নেতা এবং জাতিসংঘের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের কার্যালয় বলেছে, ‘ইসরায়েলের দখলদারিত্বের পদক্ষেপ এই অঞ্চল ও বিশ্বের নিরাপত্তা ও শান্তি জন্য হুমকি স্বরূপ। এটি সমস্ত রেড লাইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন।’
ইইউ-এর পররাষ্ট্র নীতির প্রধান জোসেপ বোরেল এরআগে শনিবার এক্স-এ পোস্ট করেছেন, ‘আমি বেশ কয়েকটি ইইউ সদস্য রাষ্ট্রের সতর্কতার প্রতিধ্বনি করছি যে, রাফাহতে ইসরায়েলি আক্রমণ একটি অবর্ণনীয় মানবিক বিপর্যয় এবং মিশরের সাথে গুরুতর উত্তেজনার দিকে নিয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘রক্তপাত এড়ানোর একমাত্র উপায় জিম্মিদের মুক্ত করার জন্য আলোচনা পুনরায় শুরু করা এবং শত্রুতা স্থগিত করা।’
জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি এক্স-এ একটি পোস্টে সতর্ক করে বলেছেন,‘গাজায় আরেকটি রক্তপাতের অনুমতি দেওয়া যাবে না’
ব্রিটিশ পররাষ্ট্র সচিব ডেভিড ক্যামেরন বলেছেন, তিনি ‘রাফাহতে সামরিক আক্রমণের সম্ভাবনা নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’
তিনি পোস্ট করেছেন, ‘অগ্রাধিকার হতে হবে যুদ্ধে অবিলম্বে বিরতি দেওয়া, যাতে সাহায্য পাওয়া যায় এবং জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা যায়।’
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের হামলার প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েল গাজায় নির্বিচার বিমান হামলা ও ভয়ংকর স্থল অভিযান শুরু করে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে এই হামলায় অন্তত ২৮,০৬৪ জন নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
ইসরায়েল বলেছে, হামাস ২৫০ জনকে জিম্মি করেছে, যাদের মধ্যে ১৩২ জন এখনও গাজায় রয়েছে যদিও ২৯ জনকে মৃত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের প্রধান আন্তর্জাতিক সমর্থক, দেশটি ইসরায়েলকে বিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তা প্রদান করে।
মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলেছে, তারা রাফাহতে স্থল আক্রমণকে সমর্থন করে না, তারা সতর্ক করে দিয়েছে যদি সঠিকভাবে পরিকল্পনা না করা হয় তবে এই ধরনের অপারেশনের ঝুঁকি ‘বিপর্যয়’ নিয়ে আসতে পারে।
ক্রমবর্ধমান হতাশার চিহ্ন হিসাবে, বাইডেন বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন, ‘হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলার জবাবে ইসরায়েলের প্রতিশোধ হামাসের হামলাকে ছাড়িয়ে গেছে।’
বাইডেন বলেছেন, ‘অনেক নিরপরাধ লোক আছে যারা ক্ষুধার্ত, সংকটে আছে এবং মারা যাচ্ছে। এই সংঘাত বন্ধ করতে হবে।’
কিন্তু নেতানিয়াহুর কার্যালয় বলেছে, রাফাতে হামাসের চারটি ব্যাটালিয়ন রেখে হামাসকে নির্মূল করার যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জন করা ‘অসম্ভব’ হবে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, শনিবার রাফাহতে তাদের একটি বিমান হামলায় হামাসের দুই ‘ঊর্ধ্বতন অপারেটর’ নিহত হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, এটি একটি বিস্তৃত বোমা হামলার অংশ এতে শহরে কমপক্ষে ২৫ জন নিহত হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :